একই সাথে পদ্মা নদীর অবারিত সৌন্দর্য আর তাজা স্বাদের ইলিশ খেতে যেতে পারেন মাওয়া ঘাটে। চাইলে ড্রাইভ করে আসতে পারেন পদ্মা সেতুর উপর থেকেও। মন যখন কিছুতেই কাজে বসছে না, মনের সামান্য তোষামোদি তখন বিলাসিতা নয়, বরং প্রয়োজন। তাই মনের তোষামোদি করতে পাড়ি দিতে পারেন মনোরম কোনো গন্তব্যে। আর সেই গন্তব্য শুধু মনের শান্তি খোঁজে না, খোঁজে চোখের শান্তি ও স্বাদের শান্তিও! টাটকা পদ্মার ইলিশ খেতে মাওয়া ফেরিঘাটে তাই ভোজনরসিক ভ্রমণকারীদের ভিড় হয় প্রায়ই। ইলিশের বিশেষ মৌসুম, অর্থাৎ ইলিশ ধরা যে সময় নিষিদ্ধ সেই সময় ছাড়া প্রায় সারা বছরই এখানে ইলিশ পাওয়া যায়।
পেটপুরে বাঙালিয়ানা খাবারের পাশাপাশি ঘুরে বেড়াতে চাইলে চলে যেতে পারেন পদ্মার মাওয়া ঘাটে। স্পীড বোটে চলে যেতে পারেন নদীর ওপারে। ওপারে যেতে ২০-২৫ মিনিটের মতো সময় লাগে; ভাড়া ১৫০ টাকা। লঞ্চেও যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে ভাড়া অনেক কম আর সময় বেশি। দেখতে পারেন নদীতে সূর্যের আলোর খেলা। তবে সাঁতার না জানলে নদীতে নামা থেকে বিরত থাকুন। আপনার জন্য এখন নদী পাড় হওয়ার অন্য উপায় আছে।

লঞ্চে বা স্পীড বোটে করে যেতে না চাইলে পদ্মা সেতু তো আছেই! নিজের গাড়িতে নিজে ড্রাইভ করেই পাড়ি দিতে পারেন পদ্মা। সেক্ষেত্রে আপনার সুযোগ মিলবে পাখির চোখে পদ্মা দেখার সুযোগ। আর বাংলাদেশের এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে সুন্দর সড়কে ভ্রমণ করার সুযোগ। পদ্মা সেতুর উপর ভ্রমণ করার সময় আপনার কিছুক্ষণের জন্য মনে হতেই পারে আপনি হয়তো ভিনদেশী কোনো বৃহৎ স্থাপনার সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।

লং ড্রাইভে এক নতুন মাত্রার আনন্দ পেতে পদ্মা সেতু ভ্রমণ আপনার একান্ত প্রয়োজনীয়। বাংলাদেশের অন্যতম এক অর্জন আপনার মন প্রাণ গর্বে ভরিয়ে তুলবে।

মাওয়া ঘাটের বিভিন্ন হোটেলে পেয়ে যাবেন টাটকা ভাজা ইলিশ বা ইলিশের তরকারি। মাওয়াঘাটের সবচেয়ে বিশেষ খাবার হলো হামানদিস্তায় পিশে বানানো ইলিশের লেজ ভর্তা। সাথে গোল গোল বেগুনভাজা। এছাড়াও আরো অনেক পদের ভর্তা পাবেন এখানে। আছে অন্যান্য মাছও। ভাত-মাছ ছাড়াও পাবেন মুরগি, ডিম, চিংড়ি বা ডালের পদ। অবশ্য গরম গরম ভাতের সাথে সরষের তেলে ইলিশ ভাজা, ইলিশের লেজভর্তা আর বেগুন ভাজার কাছে অন্য সব পদ বাহুল্যই মনে হবে৷ এছাড়াও আছে বিখ্যাত মালাই চা। পেটপুরে খেয়েদেয়ে ঘুরতে বের হয়ে যেতে পারেন।

আবার হোটেলের ইলিশ খেতে না চাইলে নিজে কিনে তারপর খেতে চাইলে সে ব্যবস্থাও আছে। তবে যেতে হবে একটু সকাল সকাল। জেলেদের কাছ থেকে নিজে দেখে কিনবেন। সে মাছ যদি তৎক্ষনাৎ রান্না করে খেতে চান তাহলে হোটেলে নিয়ে গেলে রান্না করে দেবে। এতে করে মাছ কখন ধরা হয়েছে, আদৌ টাটকা কিনা এ নিয়ে কোনো সন্দেহ থাকবে না। আবার চাইলে নিজের পরিবারের জন্য কিনেও নিয়ে আসতে পারেন কয়েক কেজি।

হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকলে মাওয়া ঘাট থেকে কাছেই লৌহজং এ চলে যেতে পারেন। সেখান থেকে নৌকায় ঘুরে আসতে পারেন পদ্মা রিসোর্ট। রিসোর্টে রাতে থাকার ব্যবস্থা আছে। একদিনে যদি ঘুরে মন না ভরে তবে একরাত চাইলে থেকে আসতে পারেন। ভরা পূর্ণিমার রাত হলে আমাদের মতে রিসোর্টে থেকে যাওয়াই আপনার জন্য ভালো হবে। রাতে স্নিগ্ধ পূর্ণিমার আলো উপভোগ করা অবশ্যই কংক্রিটের চার দেয়ালে ঘুমানোর চেয়ে ভালো। কী ভাবছেন? এতো নিরিবিলি জায়গায় রাতে থাকা কতোটা নিরাপদ?

তাহলে চিন্তার কিছু নেই। জায়গাটা মোটেই নিরিবিলি নয়। সৌন্দর্যের খোরাক মেটানোর আশায় প্রায় সবসময়ই জায়গাটায় সৌন্দর্যপিপাসু মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। তাই নিরাপত্তা নিয়ে ভয় পাবার কিছু নেই। বন্ধু বা পরিবারের সাথে সারারাত আড্ডা, জোছনা বিলাস শেষে ভোরে খাওয়া-দাওয়া করে ফিরে আসতে পারেন শহরে।

আর যদি থাকতে না চান তাহলে মাত্র ৫০ টাকা প্রবেশ মূল্য দিয়ে শুধু রিসোর্টে ঘুরে আসতে পারবেন।

মধ্যরাতে আশেপাশের সব যখন অতল ঘুমে নিরব হয়ে যায় তখনো মাওয়া ফেরিঘাটে থাকে জমজমাট পরিবেশ৷ সকল বয়সের মানুষের উচ্ছ্বল আড্ডায় মুখরিত থাকে নদীর পাড়৷ হোটেলগুলোতে চলতে থাকে মাছ কেনা-বেচা, কাটাকুটি আর ভাজাভাজির ব্যস্ততা। ফেরিঘাটের পরিবেশ দেখে ভুলেই যেতে পারেন ঘড়ির কাঁটার এগিয়ে চলা সময়কে। তাই রাতের মাওয়াঘাট উপভোগ করার সুযোগ আপনার হাতছাড়া করা খুব একটা যে ভালো বুদ্ধি হবে, তা কিন্তু নয়।

হুটহাট প্রিয়জনদের সাথে একদিন বা একবেলার ভ্রমণের জন্য ঢাকার কাছে মাওয়াঘাটের বিকল্প বোধহয় কিছু নেই। পদ্মার পাড়ের এই এলাকায় প্রতিবার ভ্রমণে আপনার নতুন অভিজ্ঞতা জন্মাবে। তাই ঢাকার আশেপাশেই কম সময়ের মধ্যে মনকে ভরিয়ে নিতে এই উইকেন্ডেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়তে পারেন মাওয়াঘাটের উদ্দেশ্যে।

এরকম লং ড্রাইভের গন্তব্যস্থল বা গাড়ির সম্পর্কে আরো মজার মজার ও তথ্যবহুল আর্টিকেল পড়তে চোখ রাখুন dreamssmartbd.com এ। আপনি যদি গাড়ি প্রেমী হয়ে থাকেন, তাহলে dreamssmartbd.com হতে আপনার ওয়ান-স্টপ ডেস্টিনেশন। আপনি আপনার গাড়ি সংক্রান্ত প্রশ্নের সমস্ত সমাধান খুঁজে পাবেন এখানেই। আর আপনি যদি সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কেনার কথা ভেবে থাকেন, তাহলে ভালোগাড়ি আপনাকে দুশ্চিন্তামুক্ত রাখবে। কারণ সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ির ২০০ টিরও বেশি যন্ত্রাংশ ও চেকপয়েন্ট পরীক্ষা করে তার কন্ডিশন নিশ্চিত করে ভালোগাড়ি। তাই, dreamssmartbd.com-এ যান এবং আপনার স্বপ্নের গাড়িটি খুঁজে নিন!